(কবিতা)
~তাপস সরকার
আজ থেকে প্রায় একুশ বছর আগে
আউলা দীঘির বিপরীতে হরিবাসরের প্রসারে
ওর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়,
আমি নির্ভীক যোদ্ধার আভরণে হাজার সৈন্যের
এক ক্লান্ত কাঠ পিপড়ের সাথে লড়ছিলাম,
যদিও যুদ্ধে জেতার ইচ্ছে ছিলনা কারোর
অজ্ঞাত পরিচয়ে পরিচিত হবার প্রচেষ্টা ছাড়া,
ওর ডালেই আমি প্রথম শুনেছি তোতাপাখির গান
সবুজ পালকে ওর সবুজ পাতায় হারিয়ে যেতে,
আমি দেখেছি রঙিন ফার্ন ওর শরীরে জড়িয়ে থেকে
প্রজাপতি, ফড়িঙের দল ওর শাখা প্রশাখায় লুকোচুরি খেলতে,
আমি দেখেছি অনেক আশ্রয়, ঘরবাড়ি ছোট ছোট প্রাণ, সৃষ্টি,
ওর পৃথিবীতে ও নিজেই হয়ে সৃষ্টির কান্ডারী,
একদিন এক ঘোর দুপুরে ওর শিকড় আশ্রয়ে
আমি ওর নাম দিয়েছিলাম 'হে বিশাল বট, তুই বটেশ্বরী,'
আজ একুশ বছর পরেও ও বিবর্তিত যৌবন,
আমি আবছা আলোর সম্মোহনে ওর ছায়াতলে
বারবার দেখি আমার শৈশব খেলা ছবি,
কখনো একা, কখনও বা সহচর সঙ্গীদের সাথে
ওর শিকড়ে ধূসর কাণ্ড, সবুজ পাতায় গড়ছি ঘর,
সেদিন শৈশব থেকে আজ আমি যৌবন
বিষাক্ত বিবেকে সৃষ্টিকে নিয়ে করেছি অস্পষ্ট গবেষণা,
জীবন প্রবাহের তুলকালামে হয়েছি বিচ্ছেদ-
তবে আমি ওর প্রতিচ্ছবি দেখি আমার গভীর চিন্তায়,
শুধু স্বপ্নের প্রকোষ্ঠে নয়, ও আজ স্মৃতি, হৃদয়, শরীরে
প্রকাশিত হয় অকৃত্রিম সংবেদন, সংবাদে,
আজ একটাই ভয় হয় আমার যৌবনের বিপরীতে
ও যদি আচমকা বিস্ফোরিত হয় আমার আচরণে!
কিংবা, ও যদি কপালকুণ্ডলার নিবৃত্তি হয়ে আত্মত্যাগ করে
কোনো অস্বাভাবিক সম্মোহনের শিকারে!
No comments:
Post a Comment